উত্তর :- চিত্র অঙ্কন :- ইসলাম পশু-পাখি, জীব-জন্তুর চিত্র অঙ্কন অনুমোদন করে না। তা সত্ত্বেও আব্বাসীয় খলিফাদের আমলে প্রাসাদগুলোয় জীব-জন্তু, ফুল এমনকি সৈনিকের প্রতিমূর্তি অঙ্কনের রীতি চালু হয়েছিল। 

হস্তশিল্প:-   তবে এ যুগে ব্যাপকভাবে প্রসারলাভ করেছিল হস্তলিপি শিল্প, অর্থাৎ সুন্দর হস্তাক্ষরের চর্চা। এসময় সুন্দর হস্তাক্ষরে কোরআন লেখকগণ চিত্রকর ভাগেক্ষা অনেক বেশি সম্মানীয় ছিলেন। আব্বাসীয় যুগে সংগীত চর্চারও ব্যাপক প্রচলন ঘটে। 

সঙ্গীত :- আব্বাসী দরবারে সংগীতজ্ঞগণ বিশেষভাবে সম্মানিত ও পুরস্কৃত হতেন। এ যুগের বিখ্যাত সংগীতজ্ঞদের মধ্যে মক্কার সিয়াহ, মসুলের ইব্রাহিম, ইবনে জামী প্রমুখ ছিলেন উল্লেখযোগ্য।

হাদীস সংগ্ৰহ :- আব্বাসীয় আমলে হাদীস সংগ্রহের ইতিহাসে সিয়াহ সিত্তাহ বা ছয়টি হাদীস সংকলন বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। ইমাম বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজী, ইবনে মাজাহ্ ও নিসায়ী এইসব হাদীস সংগ্রহ করেছিলেন। 

 সাহিত্য চর্চা :-  সাহিত্যের ক্ষেত্রেও মুসলমানদের অবদান কম ছিল না। ইস্পাহানী, ইবনে খালিকন, আনসারী, জালালউদ্দিন রুমী ও ইবনে ইসহাক প্রমুখ ছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক। বিখ্যাত 'ইউসুফ-জুলখা', 'লায়লা-মজনু' ও 'আলিফ-লায়লা' রচিত হয়।

আব্বাসীয় যুগের স্থাপত্য শিল্প : ইসলামের প্রাথমিক যুগে মসজিদই ছিল সকল কার্যের কেন্দ্রস্থল এবং স্থাপত্য শিল্পের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন, কিন্তু আব্বাসীয় আমলে স্থাপত্য শিল্প হিসাবে মসজিদ ছাড়াও সমাধি সৌধ, সরকারি ভবন, রাজপ্রাসাদ, দুর্গ প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে। আব্বাসীয় আমলে বাগদাদে রাজধানী (সিরিয়ার দামেস্ক থেকে) স্থানান্তরিত হওয়ায় স্থাপত্য শিল্পে পারস্য ও ইরাকের সাসানীয় প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হয়। ৭৬২ খ্রিঃ খলিফা আল-মানসুর অনেকগুলি প্রাসাদ, মসজিদ ও দুটি প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত বাগদাদ নগরী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এছাড়া কর্ডোভার মসজিদ (৭৮৭ খ্রিঃ) কায়রোয়ান মসজিদ (৮৩৬ খ্রিঃ), মুসার মসজিদ (৮৫০ খ্রিঃ), সামারার বড়ো মসজিদ, টিউনিসের মসজিদ প্রভৃতি আব্বাসীয় আমলের স্থাপত্যশিল্পের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন।

      আরও পড়ুন