হায়দ্রাবাদ কীভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় ?
ভূমিকা : ভারত ভূখন্ড দ্বারা বেষ্টিত ৪২ হাজার বর্গমাইল এলাকা বিশিষ্ট হায়দ্রাবাদ রাজ্য ছিল ভারতের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ রাজ্য। এই রাজ্যের ৮৭% প্রজা ছিল হিন্দু এবং শাসক নিজাম ছিলেন মুসলিম। হায়দ্রাবাদকে ভারত ভুক্তির জন্য নিজাম ওসমান আলি খানের কাছে ভারত সরকার আবেদন জানায়। কিন্তু নিজাম হায়দ্রাবাদের জনগণ ও তার সরকারের কথায় কর্ণপাত না করে স্বাধীন থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
(1) ভারত বিদ্বেষ : সাম্প্রদায়িক নেতা কাশিম রিজভির পরামর্শে নিজাম প্রভাবিত হয়ে পড়েন। কাশিম রিজভির নেতৃত্বে 'রাজাকার' নামে হায়দ্রাবাদের দাঙ্গা বাহিনী সীমান্তবর্তী ভারতীয় ভূখন্ডের হিন্দুদের ওপর চরম অত্যাচার শুরু করলে তারা ভারতের ত্রাণ শিবিরগুলিতে আশ্রয় নেয়।
(2) হায়দ্রাবাদ বিদ্রোহ : (i) ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে হায়দ্রাবাদ রাজ্যের তেলেঙ্গানার কৃষকরা নিজামের কুশাসন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। (ii) ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ৭ই আগস্ট হায়দ্রাবাদ রাজ্য কংগ্রেস প্রশাসনের গণতন্ত্রীকরণের জন্য সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু করলে নিজাম ২০হাজার সত্যাগ্রহীকে বন্দি করে। ফলে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করে।
হায়দ্রাবাদের ভারত ভুক্তি : ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে সেপ্টেম্বর মাসে ভারত সরকার নিজামকে এক চরমপত্র দেয়। ভারত সরকার অন্যান্য দাবির সঙ্গে অত্যাচারী 'রাজাকার' বাহিনী ভেঙ্গে দেওয়া দাবি জানায়। নিজাম ভারতের দাবি উপেক্ষা করলে ১৯৪৮ খ্রিঃ ১৩ সেপ্টেম্বর জেনারেল জয়ন্তনাথ চৌধুরীর নেতৃত্বে ভারতীয় সেনা বাহিনী হায়দ্রাবাদে প্রবেশ করে যা অপারেশন পোলো নামে পরিচিত।
(4) আত্মসমর্পণ ও ভারত ভুক্তির দলিলে স্বাক্ষর : ভারত ১৮ সেপ্টেম্বর হায়দ্রাবাদ রাজ্য দখল করে। ১৯৪৯ খ্রিঃ নিজাম ভারত ভুক্তির দলিলে স্বাক্ষর করেন। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারী হায়দ্রাবাদ আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত ভুক্ত হয়।