আইন অমান্য আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা আলোচনা কর।
ভূমিকা:- জাতীয় কংগ্রেস ১৯৩০ খ্রি. ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে আইন অমান্য আন্দোলন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়। গান্ধিজীর ডাকে দেশের নারী সমাজ সক্রিয় ভাবে এই আন্দোলনে অংশ নেয়।
(১) আন্দোলনের সূচনা : গান্ধিজী ৭৯ জন অনুগামী নিয়ে ১২ মার্চ (১৯৩০ খ্রি.) সবরমতী আশ্রম থেকে সমুদ্র উপকূলবর্তী স্থানে ডান্ডি লবণ আইন ভঙ্গ করার জন্য যাত্রা করেন। এই আন্দোলনে বহু নারী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে।
(২) আন্দোলনের কর্মসূচী : গান্ধিজির ডাকে সারা ভারতে হাজার হাজার নারী সভা-সমাবেশ ও মিছিলে অংশ নিয়ে বিদেশি পণ্য ব্যবহার বন্ধ করে, বিদেশি পণ্যের দোকানের সামনে পিকেটিং করে, সরকারি স্কুল-কলেজ, অফিস- আদালত ত্যাগ করে সরকারকে রাজস্ব দেওয়া বন্ধ করে তারা আন্দোলনকে শক্তিশালী করে তোলেন।
আন্দোলনের প্রসার : কলকাতা, দিল্লি, বোম্বাই, লক্ষ্ণৌ, লাহোর, এলাহাবাদ প্রভৃতি শহরে অসংখ্য নারী আইন অমান্য আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কমলাদেবী, আন্তিকা বাঈ গোখেল প্রমুখের নেতৃত্বে অসংখ্য নারী লবণ আইন ভঙ্গ করেন। দিল্লিতে ১৬০০জন নারী কারাবরণ করেন। কলকাতায় নারী সত্যাগ্রহ সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পাঞ্জাবে রাজকুমারী অমৃত কাউর আন্দোলনকে শক্তিশালী করেন।
বাংলায় : বাংলায় মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল, কাঁথি, তমলুক প্রভৃতি স্থানের নারীরা পুলিশি নির্যাতন উপেক্ষা করে সরকারের লবন আইন ভঙ্গ করেন। আইন অমান্য আন্দোলনকালে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত, সুহাসিনী গাঙ্গুলি প্রমুখ নারী সশস্ত্র বিপ্লবী কার্যকলাপ চালান।
নেতৃত্ব : জাতীয় স্তরে আইন অমান্য আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী নারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন কস্তুর বা বাসন্তী দেবী, উর্মিলা দেবী, সরলাবালা দেবী, নেলী সেনগুপ্তা, নীলানাগ প্রমুখ।