উমাইয়া ও আব্বাসী শাসনামলের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

 ভূমিকা : হজরত মুহাম্মাদের নেতৃত্বে ইসলামী সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা হয়। ইসলামী সাম্রাজ্যে তার কর্তৃত্ব ছিল মাত্র দশ বছর। অতঃপর খোলাফায়ে রাশেদীনগণ কৃতিত্বের সাথে প্রায় ত্রিশ বছর সাম্রাজ্য পরিচালনা করেন। অতঃপর পর্যায়ক্রমে উমাইয়া ও আব্বাসীগণ সাম্রাজ্য পরিচালনা করেন।

বৈশিষ্ট্যের তুলনা : উমাইয়াগণ প্রায় নয় দশক কাল ধরে সাম্রাজ্য পরিচালনা করেন। এই সময়ে ইসলাম ধর্ম ও ইসলামী সাম্রাজ্যের প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয়। সাম্রাজ্য বিস্তার লাভ করে।

উমাইয়া খেলাফত ছিল আরবদের গোত্রগত ও জাতিগত রাজতন্ত্র। কিন্তু আব্বাসী যুগের খিলাফত ছিল ইসলামী সাম্রাজ্য ও মুসলিম রাজতন্ত্র। তারা ছিল ইসলামের স্বঘোষিত রক্ষাকর্তা। আব্বাসী বংশের প্রতিষ্ঠাতা আবুল আব্বাস প্রথম ঘোষণা করেন যে আল্লাহর কিতাব ও রসূলের সুন্নাহ অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালিত হবে।উমাইয়া উলিফাগণ আপন আপন চিন্তাধারা অনুযায়ী সাম্রাজ্য পরিচালনা করত। কিন্তু আব্বাসী যুগে খলিফাগণ শাসনকার্য পরিচালনার জন্য উলামার পরামর্শ নিতেন।

উমাইয়া ও আব্বাসী শাসনামলের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। শাসনব্যবস্থা ছিল সকল শ্রেণির মুসলমানদের জন্য গোত্র বা জাতিগত কোনো পার্থক্য ছিল না। তারা একটি আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছিল, কিন্তু উমাইয়া যুগে ইসলামী চিন্তাভাবনা শুধু আরবদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।

রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও উভয়ের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ করায় প্রথম দিকে আব্বাসীয়রা উমাইয়াদের মতো সমগ্র সাম্রাজ্যের ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে পারেনি যা উমাইয়াদের হস্তগত ছিল।

 উমাইয়া যুগে সাম্রাজ্যের কেন্দ্র ছিল সিরিয়ার দামাস্কাস কিন্তু আব্বাসী যুগে তার পরিবর্তে ইরাক হয়ে ওঠে রাজধানী।

আব্বাসীয় যুগে আরবজাতি তাদের সামরিক শক্তি ও জাতীয় প্রেরণা হারিয়ে ফেলে। উমাইয়া যুগের আরবদের সাম্রাজ্য বিস্তারের মূলে ছিল ধর্মীয় চেতনা ও সামরিক বাহিনীর রণনৈপুণ্য। কিন্তু আব্বাসী যুগে এই নীতি পরিত্যক্ত হওয়ায় তাদের ক্ষমতার হ্রাস হয়।

 উজির পদ সৃষ্টি করা ছিল আব্বাসী যুগের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। উমাইয়াগণ সাম্রাজ্য পরিচালনার জন্য উপদেষ্টা পরিষদ বা মাজলিসুশ সুরা গঠন করেছিলেন। কিন্তু আব্বাসীগণ সরাসরি এ কাজের জন্য উজির নিয়োগ করেন যদিও ঐ উজির গঠনই পরবর্তীতে খলিফার ক্ষমতাও হ্রাস করে।

 তবে আব্বাসী বংশের শাসনব্যবস্থা গ্রহণের সাথে সাথে প্রাথমিক ইসলামী যুগে একটি বৈপ্লবিক ঘটনা ঘটে যা ইসলামের পরবর্তী যুগের জীবন ব্যবস্থা, সমাজ, সংস্কৃতি, সভ্যতা, শিল্পকলা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানকে প্রভাবিত করে।

 এককথায় বলা যায় উমাইয়া যুগ ছিল রাজ্য বিস্তারের যুগ আর আব্বাসী যুগ ছিল। জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগ। এ প্রসঙ্গে একজন ফরাসী ঐতিহাসিক বলেন জয়ের যুগ চলে গেছে, সভ্যতার যুগ শুরু হয়েছে।

         আর ও পড়ুন 







স্পেনে উমাইয়া শানের উত্থানে আব্দুর রহমানের অবদান আলোচনা করো। 👉 Click Here 

উমাইয়া বংশের SAQ  ও MCQ প্রশ্ন ও উত্তর। 👉 Click Here 

ইসলামের ইতিহাসের সমস্ত প্রশ্ন ও উত্তর জানতে 👉Click Here


উমাইয়া ও আব্বাসী শাসনামলের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
×