উমাইয়া শাসনের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।
ভূমিকা : খারেজি বিদ্রোহীদের হাতে চতুর্থ খলিফা হজরত আলীর (রঃ) মৃত্যুর পর ৬৬১ খ্রিঃ মুআবিয়ার হাত ধরে উমাইয়া শাসনের সূচনা হয়। দীর্ঘ নব্বই বছর পর ৭৫০ খ্রিঃ যাবের যুদ্ধে আব্বাসীদের নিকট পরাজিত হয়ে পতন সম্পন্ন হয়। বেশিরভাগ সময় অশান্তি থাকলেও সামাজিক নানা সংস্কার সাধিত হয়েছিল।
সামাজিক শ্রেণিবিভাগ : উমাইয়া আমলে সমাজে চারটি শ্রেণি ছিল—
(i) শাসক মুসলিম শ্রেণি।
(ii) মাওয়ালী বা নবদীক্ষিত মুসলিম সমাজ।
(iii) যিম্মি অর্থাৎ অমুসলিম ইহুদি খ্রিস্টান সমাজ।
(iv) ক্রীতদাস।
শাসকশ্রেণি সাম্রাজ্যের শ্রীবৃদ্ধি ঘটালেও নৈতিকভাবে তাদের অধঃপতন ঘটেছিল। নাচ, গান ও অনৈসলামিক কাজকর্ম তাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছিল। একমাত্র দ্বিতীয় উমার ছাড়া সকলেই এতে লিপ্ত ছিল। মাওয়ালী ও ক্রীতদাস শ্রেণির তেমন কোনো সামাজিক মর্যাদা ছিল না। মাওয়ালীরা শিক্ষাদীক্ষা গ্রহণ করে সামাজিক অগ্রগতি করলেও ক্রীতদাসরা পিছিয়েই ছিল। যিম্মি সমাজ স্বাধীনভাবে কৃষিকার্য ও ধর্মাচরণ করতে পারত।
নারীসমাজ : উমাইয়া যুগে নারীসমাজ যথেষ্ট স্বাধীনতা ভোগ করত। শিক্ষা দীক্ষা, সৌন্দর্য চর্চার যথেষ্ট খ্যাতি ছিল। আবৃতি ও গজলের প্রচলন ছিল। তাপসী রাবিয়া বিখ্যাত সাধক ছিলেন। তবে নাচ-গান ব্যভিচারও ছড়িয়ে পড়েছিল।
শিক্ষা : উমাইয়া যুগে রাজধানী দামাস্কাসকে ঘিরে ব্যবসাবাণিজ্যের পাশাপাশি শিক্ষাদীক্ষারও যথেষ্ট উন্নতি হয়েছিল। বিশেষ করে আরবী ব্যাকরণ ও অভিধান শাস্ত্রে বিশেষ অগ্রগতি হয়েছিল। হাদীস ও ফেকাশ শাস্ত্রেরও সুবর্ণ যুগ ছিল।
পোশাক পরিচ্ছদ : উমাইয়া যুগে সাধারণের পোশাক পরিচ্ছদ ছিল আড়ম্বরপূর্ণ। জুমআর সময় খলিফারা বিশেষ ধরনের পোশাক পরিধান করত। তবে পেশা হিসাবে ভিন্ন পোশাকের প্রচলন ছিল। পুরুরো সাধারণত চিলে পাজামা, পাঞ্জাবি ও পাগড়ি পরত।
আর ও পড়ুন
উমাইয়া ও আব্বাসী শাসনামলের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। 👉 Click Here
স্পেনে উমাইয়া শানের উত্থানে আব্দুর রহমানের অবদান আলোচনা করো। 👉 Click Here
উমাইয়া বংশের SAQ ও MCQ প্রশ্ন ও উত্তর। 👉 Click Here