রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্ববিদ্যালয় ভাবনা সম্পর্কে আলোচনা করো।

  ভূমিকাঃ 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতে ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে ১৯২১ খ্রিঃ বীরভূমের শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় ভাবনা আবর্তিত হয়।

(1) বিদ্যার সাধনাঃ

 রবীন্দ্রনাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে বিদ্যা সাধনার ক্ষেত্র হিসেবে দেখেছেন। তাঁর মতে "বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিশেষ সাধনার ক্ষেত্র।" সাধারণভাবে বলা চলে সে সাধনা বিদ্যার সাধনা"। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য উদ্দেশ্য হল বিদ্যা উদ্ভাবন, গৌণ উদ্দেশ্য হল বিদ্যাদান।

(2) উন্মুক্তদ্বার:

 রবীন্দ্রনাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বার সকলের জন্য উন্মুক্ত করার পক্ষপাতী ছিলেন। দেশ বিদেশের সকল পন্ডিত শিক্ষার্থীরা যাতে বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্যাসাধনার সুযোগ পায় রবীন্দ্রনাথ তা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন।

বৈচিত্র্য:

 রবীন্দ্রনাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রমে বৈচিত্র্য আনার পক্ষপাতী ছিলেন। এজন্য বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দি ভবন, চিনা ভবন, কৃষি অর্থনৈতিক গবেষণাকেন্দ্র পল্লি শিক্ষা ভবন প্রভৃতি প্রতিষ্ঠা হয়। রবীন্দ্রনাথের আমন্ত্রনে দেশবিদেশের বহু খ্যাতনামা পন্ডিত এখানে শিক্ষাকতা করতে আসেন।

মানসত্তার বিকাশ: 

রবীন্দ্রনাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার ক্ষেত্রে মানুষের মানব সত্তার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটিয়ে তাকে সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণকামী সদস্য হিসেবে গড়ে তোলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন মানুষের অভ্যন্তরের মানুষটিকে পরিচর্যা করা খাঁটি মানুষ বানানোর প্রচেষ্টাই শিক্ষা।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
×