টীকা লেখো: কিষাণ সভা/ নিখিল ভারত কিষাণ সভা/কিষাণ সভা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?

 ভূমিকাঃ 

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে কমিউনিস্ট ভাবধারার প্রভাবে ভারতের কৃষকশ্রেণি সাম্রাজ্যবাদী অপশাসনের বিরুদ্ধে ক্রমে সচেতন হয়ে ওঠে। এর পরিণতিতে ১৯৩৬ খ্রিঃ ভারত কিষাণ সভা প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রেক্ষাপট: 

১৯২০ খ্রিঃ অহিংস অসহযোগ আন্দোলন এবং ১৯৩০ খ্রিঃ আইন অমান্য আন্দোলনে কৃষকশ্রেণি যুক্ত হয়ে পড়ে। তাদের সংগঠিত করে কৃষক আন্দোলন জোরদার করার উদ্দেশ্যে এই সময় জাতীয়তাবাদী, বামপন্থী ও সমাজতান্ত্রিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে ওঠে।

এন.জি.রঙ্গ প্রমুখের উদ্যোগঃ 

প্রথমে এন.জি.রঙ্গ এবং ই.এম.এস নাম্বুজিপাদ কিষাণ সভা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। তারা ১৯৩৫ খ্রিঃ দক্ষিণ ভারতীয় কৃষক ও কৃষি শ্রমিক যুগ্ম সংস্থা নামক কৃষকদের নিয়ে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন।

কিষাণ সভা প্রতিষ্ঠা: 

এরপর ১৯৩৬ খ্রিঃ নিখিল ভারত কিষাণ সভা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং উত্তরপ্রদেশের লক্ষ্ণৌ শহরে এর প্রথম অধিবেশন বসে। এই অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বিহারের কৃষক নেতা স্বামী সহজানন্দ সরস্বতী।

লক্ষ্য:

 কিষাণ সভার প্রধান লক্ষ্যগুলি ছিল-

(i) জমিদারিও মহাজনি প্রথার বিলোপ, 

(ii) ভূমিরাজস্ব ও খাজনার পরিমাণ হ্রাস, 

(iii) বেগার প্রথার অবসান,

 (iv) সেচব্যবস্থার উন্নতি, 

(v) বনজ সম্পদ সংগ্রহের চিরাচরিত অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, 

(vi) জাতীয় আন্দোলনে কৃষকদের শামিল করা প্রভৃতি।

 গুরুত্ব: 

নিখিল ভারত কিষাণ সভা প্রতিষ্ঠার ফলে-

(1) কৃষক শ্রেণির ওপর শোষণের বিরুদ্ধে কৃষকরা সচেতন হয়ে ওঠে।

 (2) ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে কৃষকরা আরও বেশি সংখ্যায় যোগ দিতে থাকে।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
×