কাশ্মীর কীভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়?
ভূমিকা :
১৯৪৭ খ্রি. স্বাধীনতা লাভের পর ভারতের অন্যতম প্রধান সমস্যা ছিল দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভূক্তির সমস্যা। এর মধ্যে সবচেয়ে জটিল সমস্যা সৃষ্টি হয় কাশ্মীরের ভারতভূক্তি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে যে সমস্যার আজ পর্যন্ত সুষ্ঠু সমাধান করা সম্ভব হয়নি।
জটিলতা:
কাশ্মীরের মহারাজা হরি সিং হিন্দু হলেও এখানকার সংখ্যা গরিষ্ঠ বাসিন্দা ছিল মুসলিম। এই অবস্থায় মহারাজা হরি সিং কাশ্মীরের স্বাধীন ও স্বতন্ত্র অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা করলে পাকিস্তান ও ভারত উভয় রাষ্ট্রই কাশ্মীরকে নিজ রাষ্ট্রে অন্তর্ভূক্ত করার চেষ্টা করে, ফলে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। অপর দিকে, কাশ্মীরের প্রধান রাজনৈতিক দল 'ন্যাশনাল কনফারেন্স'-এর নেতা শেখ আবদুল্লা কাশ্মীরের ভারতভূক্তির জন্য আন্দোলন করেন।
পাকিস্তানের কাশ্মীর আক্রমণ:
এই অবস্থায় ১৯৪৭ খ্রি. ২২ অক্টোবর পাকিস্তানের মদতপুষ্ট হানাদার বাহিনী কাশ্মীরে প্রবেশ করে হত্যা, লুটতরাজ ও নির্যাতনসহ ব্যাপক হিংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু করে, ফলে মহারাজা হরি সিং ভারত সরকারের সামরিক সাহায্য প্রার্থনা করে।
কাশ্মীরের ভারতভুক্তি:
এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারত জানিয়ে দেয় যে মহারাজা, ভারতভূক্তির দলিল-এ স্বাক্ষর করলে তবেই তারা কাশ্মীরে সেনা পাঠাবে। পাকবাহিনী কাশ্মীরের বিভিন্ন 'স্থান দ্রুত দখল করতে থাকলে মহারাজা হরি সিং 'ভারত ভূক্তির দলিল'-এ স্বাক্ষর করেন। ভারতীয় সেনার অভিযানঃ ২৭ অক্টোবর প্রায় ১০০টি বিমানে ভারতীয় সেনাবাহিনী কাশ্মীরে অবতরণ করে। তারা হানাদারদের বিতাড়িত করে কাশ্মীরের দুই-তৃতীয়াংশ ভূখন্ড উদ্ধার করেন। ৩১ অক্টোবর কাশ্মীরে শেখ আবদুল্লাহ-এর নেতৃত্বে আপৎকালীন শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। এর বিরোধিতা করে পাকিস্তান তা দখলীকৃত কাশ্মীরে 'আজাদ কাশ্মীর' নামে একটি সমান্তরাল সরকার প্রতিষ্ঠা করে।