আইন অমান্য আন্দোলনের সময় কৃষকদের ভূমিকা লেখো।
ভূমিকা:
অসহযোগ আন্দোলনের পর আইন অমান্য আন্দোলন ছিল গান্ধিজির নেতৃত্বে পরিচালিত দ্বিতীয় সর্বভারতীয় গণ আন্দোলন। এই আন্দোলন ছিল অহিংসা। লবণের মতো নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্য আন্দোলনের বিষয় হওয়ায় সর্বশ্রেণির মানুষ এই আন্দোলনে যোগ দেয়। আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।বিশেষত কৃষকশ্রেণি ।
এই কৃষকশ্রেণির ভূমিকা:
লবণ কর বর্জন এবং জমির খাজনাসহ অন্যান্য কর বর্জন আন্দোলনের কর্মসূচীতে ছিল। সেজন্য কৃষকেরা সক্রিয়ভাবে এই আন্দোলনে যোগ দেয়।
উত্তরপ্রদেশ:
কৃষকদের সমর্থনে এই আন্দোলন উত্তরপ্রদেশে গণ আন্দোলনে পরিণত হয়। রায়বেরিলি বাবাবাঁকি, এলাহাবাদ জেলায় কালকাপ্রসাদ কৃষকদের সংগঠিত করেন। এরপর তিনি জমিদার বিরোধী খাজনা বন্ধের আন্দোলন শুরু করেন। জহরলাল নেহেরু খাজনা বন্ধের বিষয়টি কংগ্রেস কমিটিতে পাস করিয়ে নেন। জমিদার ও কৃষক উভয় শ্রেণিকেই খাজনা না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
গুজরাট:
এই আন্দোলনের সময় সুরাট জেলার বারদৌলি তালুক, খেদা জেলা, ব্রোচ জেলার জম্বুসারে খাজনা বন্ধ আন্দোলন হয়। পুলিশি অত্যাচার প্রবল হয়ে উঠলে সেখানকার কৃষকেরা তাদের গবাদি পশু ও অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে প্রতিবেশী দেশীয় রাজ্য বরোদায় আশ্রয় নেয়। কয়েক মাস কষ্ট ভোগ করে শান্তি ফিরলে তারা নিজগৃহে ফিরে আসে।
অন্যান্য রাজ্য:
স্বামী সহজানন্দ সরস্বতীর নেতৃত্বে বিহারে, দ্বারকা প্রসাদ মিশ্রের নেতৃত্বে মধ্যপ্রদেশ, এন.জি.রঙ্গের নেতৃত্বে অন্ধ্রে কৃষক সংঘের পরিচালনায় উড়িষ্যায় কৃষক আন্দোলন শুরু হয়।
মূল্যায়ন:
এইভাবে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সীমিতভাবে কৃষক আন্দোলন ঘটে। কৃষকশ্রেণি জাতীয় আন্দোলনের অংশীদার হয়ে ওঠে। খাজনা বন্ধ কর্মসূচী গ্রহণ করে। ফলে আগামী দিনে কৃষক সভা গঠনের পথ প্রশস্ত হয়।