আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে সরলাদেবী চৌধুরানির আত্মজীবনী জীবনের ঝরাপাতা-এর গুরুত্ব কী?

 ভূমিকাঃ

 সরলাদেবী চৌধুরানির লেখা জীবনের 'ঝরাপাতা' বাংলা সাহিত্যের একটি মূল্যবান ও মুখ্যপাঠ্য আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা। এটি আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনায় বিভিন্নভাবে তথ্য সরবরাহ করে।

(১) বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ড: 

সরলাদেবী চৌধুরানি ভারতের ব্রিটিশ-বিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন। 'জীবনের ঝরাপাতা'র ছত্রে ছত্রে ভারতের সশস্ত্র বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে নানা তথ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তিনি নিজেও যে এই ধরণের সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তা জীবনের ঝরাপাতা থেকে জানা যায়।

(২) অর্থনৈতিক শোষণঃ

 ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে অর্থনৈতিক শোষণের নানা ছবি জীবনের ঝরাপাতা গ্রন্থে আলোচিত হয়েছে। নীলচাষি, চা বাগানের কুলিও শ্রমিক সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ কীভাবে ব্রিটিশ এবং তাদের সহযোগীদের অত্যাচার ও শোষণের শিকার হয়েছিল তা সরলাদেবী চৌধুরানি তাঁর গ্রন্থে স্পষ্টভাবে আলোচনা করেছেন।

(৩) ঠাকুর বাড়ির অন্দর মহলঃ

 ঠাকুর বাড়ির অন্দরমহলের বিভিন্ন ঘটনা। যেমন ঠাকুর বাড়ির সাংস্কৃতিক চর্চা, ঈশ্বর ভাবনা, বিভিন্ন সামাজিক বিধান পালন, শিশুদের একসঙ্গে বাড়তে থাকা প্রভৃতি নানা ঘটনার খন্ডচিত্র জীবনের ঝরাপাতায় উঠে এসেছে। এগুলি আধুনিক বাংলার সামাজিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

(৪) স্বদেশী আন্দোলন:

 ১৯০৫ খ্রি. স্বদেশি আন্দোলন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য 'জীবনের ঝরাপাতা'য় পাওয়া যায়। স্বদেশি আন্দোলনের যুগের স্বদেশি পণ্যের উৎপাদন ও প্রচারের উদ্দেশ্যে তিনি 'লক্ষ্মীর ভান্ডার' নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করেন।

রবীন্দ্রনাথ ও স্বামী বিবেকানন্দ: 

সরলাদেবী চৌধুরানি সে যুগের দুই মনীষী রবীন্দ্রনাথ ও স্বামী বিবেকানন্দের মধ্যে যোগসূত্র ছিলেন। এই দুই মনীষীর প্রতি সরলা দেবীর কেমন দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যায়ন ছিল তা বই থেকে জানা যায়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
×