আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আত্মজীবনী জীবনস্মৃতি-এর গুরুত্ব কী?

 ভূমিকা:

 আধুনিক ভারতের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল বিভিন্ন ব্যক্তির লেখা আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা। এক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আত্মজীবনী 'জীবনস্মৃতি' আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে বিশেষ গুরুত্বের দাবী রাখে।

(১) বাঙালির স্বাদেশিকতা: 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জীবনস্মৃতি গ্রন্থে ঔপনিবেশিক বাংলার, বিশেষ করে কলকাতার ধনী পরিবারগুলির জীবনযাত্রার আভাস দিয়েছেন। এ যুগে অভিজাত বাঙালি পরিবারের বিভিন্ন বিদেশি প্রথার প্রচলন শুরু হলেও স্বদেশের প্রতি অনুরাগ ও জাগ্রত ছিল। তাঁরা সন্তানদের শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষা এবং পাশ্চাত্য শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিলেও বাংলা ভাষা ও শিক্ষার প্রতি অনুরাগ ও লক্ষ্য করা যায়। ঠাকুর বাড়ির অন্দর মহল: 'জীবনস্মৃতি' গ্রন্থে ঠাকুর বাড়ির স্বাধীনতা প্রভৃতি বিভিন্ন ঘটনার ছবি তুলে ধরা হয়েছে। এগুলি থেকে সমকালীন বাংলার সামাজিক ইতিহাসের নানা তথ্য পাওয়া যায়।

রাজনৈতিক ঘটনাবলী: 

জীবনস্মৃতিতে রবীন্দ্র নাথ তাঁর দাদা জ্যোতিরিন্দ্র নাথ ঠাকুরের উদ্যোগে এবং রাজনারায়ন বসুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্বদেশিকতার সভা, দাদা জ্যোতিরিন্দ্র নাথের উদ্যোগে ধূতি ও পায়জামার সমন্বয়ে ভারতের একটি সর্বজনীন পরিচ্ছদ প্রচলনের চেষ্টা। স্বদেশি দেশলাই কারখানা বা কাপড়ের কল প্রতিষ্ঠায় যুবকদের উদ্যোগ প্রভৃতির উল্লেখ করেছে। হিন্দুমেলা: জীবনস্মৃতি-তে নবগোপাল মিত্রের হিন্দুমেলা সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া যায়। হিন্দু মেলার স্বদেশপ্রেম সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন যে ভারতবর্ষকে স্বদেশ বলিয়া ভক্তির সহিত উপলব্ধির চেষ্টা সেই প্রথম হয়। মেজদাদা (সত্যেন্দ্র নাথ ঠাকুর) সেই সময়ে বিখ্যাত জাতীয় সংগীত মিলে সবে ভারত সন্তান রচনা করেছিলেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
×