শান্তিনিকেতনে বেড়াতে যাওয়া নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা করো।

 আসসালামুআলাইকুম, সবাই কেমন আছো আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আজকের আমরা আলোচনা করব কয়েকটি সংলাপ রচনা নিয়ে। আমরা সকলে জানি মাধ্যমিক ৫ নম্বরে একটি সংলাপ লিখতে, যেটা খুব সহজ। নিচের সংলাপ গুলি ভালো করে পড়ে নিজে নিজে লেখা প্রাকটিস করো। যদি তুমি বার বার সংলাপ লেখা প্রাকটিস করো তাহলে যেকোনো ট্রপিকের সংলাপ লিখতে পারবে। নিচের পোস্টটি ভালো করে পড়ো এবং লিখে প্রাকটিস করো। 

মাধ্যমিক সংলাপ রচনা

শান্তিনিকেতনে বেড়াতে যাওয়া নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ

পল্টু: কীরে এবার তোদের স্কুলে থেকে কোথায় বেড়াতে নিয়ে যাচ্ছে?

রাজু: শান্তিনিকেতন। জানো মনে মনে ভাবলে এত আনন্দ হচ্ছে যে তোমাকে আর কী বলব। কত দিনের ইচ্ছা শান্তিনিকেতন দেখার।

পল্টু: বুঝতে পারছি সব বুঝতে পারছি, আমিও সেবার প্রথম শান্তিনিকেতন যাই আমারও তোর মতোই আনন্দ হয়েছিল।

রাজু: এখন হয় না।

পল্টু: হয়তো, কিন্তু প্রথম শান্তিনিকেতন দেখার আনন্দটাই আলাদা, দুচোখ ভরে শুধু দেখে যাবি। চারিদিকে কেবলই সবুজের খেলা।

রাজু: তাই, তুমি কোথায় উঠেছিলে?

পল্টু: শান্তিনিকেতনের অতিথি শালায়।

রাজু: এতদিন শান্তিনিকেতন সম্পর্কে কাগজে পড়েছি, টিভিতে দেখেছি, বই-এ পড়েছি, এবার চাক্ষুষ দেখব। ভাবলেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাচ্ছি।

পল্টু: উপাসনা গৃহ, ছাতিম তলা, আম্রকুঞ্জ, উত্তরায়ণ দেখলে মণ ভরে যায়। আয় দোলের সময় শান্তিনিকেতন দেখার যে সুখ তার আর অন্য কোথাও গেলে মেলা ভার। অন্যরূপে সেদিন শান্তিনিকেতন সেজে ওঠে।

রাজু: আচ্ছা ছাতিমতলাতেই লেখা আছে না, তিনি আমার প্রাণের আরাম, মনের আনন্দ, আত্মার শান্তি? পল্টু: হ্যাঁ রে শান্তিনিকেতন ঘুরে বেড়ালেই সেই শান্তির খোঁজ তুই পেয়ে যাবি।

রাজু: আচ্ছা আমাদের স্কুল থেকে মাত্র দু-রাত থাকবে, তাতে সব ঘোরা হবে? তোমার কাছে শুনে তো মনে হচ্ছে হবে না তাহলে?

পল্টু : শান্তিনিকেতন একবার যাবার নয়, বারবার যাবার জায়গা। যেদিক দিয়েই হাঁটবি না কেন তোর মনে হবে হয়তো এদিক দিয়েই রবীন্দ্রনাথ হেঁটে গিয়েছিলেন। আবার যখন তুই উত্তরায়ণ যাবি তখন তোর মনে হবে, এই তো বইতে যে পড়েছি এখানে বসেই তো রবীন্দ্রনাথ কত গান, কত কবিতা লিখেছেন, সবথেকে বড়ো কথা কী জানিস ছাতিমতলায় দাড়িয়ে যখন আম্রকুঞ্জের দিকে তাকিয়ে থাকি তখন রবীন্দ্রনাথের সেই পিছনে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার ছবিটি চোখের সামনে ভেসে ওঠে।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিষয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ রচনা করো।

 সালমা: শনিবার ঈদ্ মনে আছে তো? আমাদের বাড়ি তোর যাওয়ার কথা।

সুদেয়া : হ্যাঁ, অবশ্যই যাব। কাকিমার হাতের সিমাই মিস করব কি করে?

সালমা: নীরা, দিশা, কাকলি সবাইকে যেতে বলেছি। তবে দিশার বাবা-মা বোধহয় ঠিক পছন্দ করেন না।

সুদেয়া: কেন? এতে অপছন্দের কী আছে?

সালমা : না, ওই খাবার ব্যাপারে বোধহয় একটু বাধা আছে।

সুদেয়া: এমন হলে কিছু বলার নেই। আমরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে মুখে আধুনিকতার কথা বলব আর কার্যক্ষেত্রে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার গোঁড়ামি নিয়ে চলব এটা তো হতে পারে না।

সালমা : কিছু বলার নেই। আমরাও তো দুর্গাপুজোতে প্যান্ডেল দেখতে যাই। একসাথে ঘুরি, খাই। কোনো অসুবিধা তো হয় না?

সুদেয়া : শুধু কি দুর্গাপুজো? সরস্বতী পুজোয় স্কুলে একসাথে ফল কাটা, মঞ্চ সাজানো, লুচি তৈরি এসবের আনন্দ ভাষায় ব্যক্ত করা যায় না।

সালমা : কেন, কালীপূজায় একসঙ্গে বাজি পোড়ানো। আর সেবার একসঙ্গে পীরবাবা মাজারের মেলায় ঘুরলাম সেগুলো বল।

সুদেয়া: সত্যি, সারাদেশে একশ্রেণির সংকীর্ণমনা মানুষের জন্যই ধর্মে ধর্মে বিভেদ সৃষ্টি হয়।

সালমা : আমাদের সবার আগে মনে রাখা উচিত যে, আমরা মানুষ, আমরা ভারতীয়। এটাই আমাদের বড়ো পরিচয়।

সুদেয়া : ঠিক বলেছিস, শুধু মুখে নয়, আইন করে নয়, অন্তর থেকে যদি আমরা অসাম্প্রদায়িক হতে পারি তবেই দেশ ও সকলের মঙ্গল।

সালমা : চল, দিশাকে সকলে বোঝাই। না হলে ভবিষ্যতে বড়া ক্ষতি অপেক্ষা করছে।

সুদেয়া : হ্যাঁ, এ ভুল আমরা সবাই মিলে ভাঙবো।

স্কুলস্তরে পাশ-ফেল প্রথা বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে একটি কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো।

সৈকত: আচ্ছা, সবাই একসঙ্গে একটি নতুন ক্লাসে উঠে যাওয়ার মজাটাই বেশ তাই না?

অসীম : ঠিক বলেছিস। কিন্তু যারা সারাবছর লেখাপড়া না-করে এই ব্যবস্থার সুবিধা নিচ্ছে তাদের ভবিষ্যৎটা ভাবো একবার।

সৈকত : সত্যি, অদ্ভুত একটা নিয়ম। শুধুমাত্র পড়াশোনার ভয় থেকে ছাত্রছাত্রীদের দূরে রাখার জন্য এবং স্কুলছুটের সংখ্যা কমানোর জন্য এই ব্যবস্থা।

অসীম : কিন্তু যে ছেলে-মেয়ের বাবা-মা লেখাপড়াই জানে না সে অকৃতকার্য হলেই তাকে টি.সি দেওয়া হবে এটাও তো কাম্য নয়।

সৈকত : কিন্তু কিছুই না শিখে একজন পরপর ক্লাসে উঠে যাবে, প্রায় জোর করে শিক্ষার মূলস্রোতে আটকে রাখা হবে এ কেমন নিয়ম।

অসীম : আসলে এ সমস্যার বীজ লুকিয়ে অনেক গভীরে। পরিকাঠামো উন্নয়ন করে, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্তরিকতার মাধ্যমে এবং আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উন্নয়নের মাধ্যমেই জাগরণ ঘটবে সবার।

সৈকত : কিন্তু ফেলের জুজুটাকে সরিয়ে, ভয় না দেখিয়ে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ ঘটানোই সারা বিশ্বে প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতি।

অসীম : ঠিকই, কিন্তু পরিসংখ্যান তো উল্টো কথাই বলছে। পাশ-ফেল না থাকায় বেশ কয়েক বছরে স্কুলছুটের সংখ্যা কমে তো নি বরং মান একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।

সৈকত : তাই তো সরকার পাস-ফেল ফিরিয়ে আনতে চলেছে। তবে এর সঙ্গে লক্ষ রাখতে হবে যাতে ফেল করা শিশুরা একেবারে স্কুলছুট না হয়ে যায়।

 অসীম : ঠিকই। তাদের অন্তত একটি সুযোগ দিয়ে কিছুটা তৈরি হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া যেতে পারে।

সৈকত : সবদিক খতিয়ে দেখেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিলে তবেই শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ সঠিক পথে এগোবে।

মোবাইল ফোনের অত্যধিক ব্যবহার নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে একটি কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো।

 সাবির: গতকাল কি হয়েছে শুনেছিস?

ফারহান : না। কি হয়েছে বলতো?

সাবির: আরে, আমাদের স্কুলের ইলেভেনের জুনেইদ কাল মোবাইল কানে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হচ্ছিল। এমন সময় একটি অটো তাকে ধাক্কা মারে। বেঁচে গেছে কোনোক্রমে। তবে পায়ে গুরুতর চোট লেগেছে। বোধ হয় অপারেশন করতে হবে।

ফারহান: সে কি রে! সব জেনে শুনে আমরাই যদি এমন অসতর্কের মতো কাজ করি তাহলে তো বিপদ হবেই।

সাবির: সত্যি স্মার্টফোন আসায় যে-কোনো বয়সের মানুষই ফোনে যেন প্রচণ্ড আসক্ত হয়ে পড়েছে। লাগামছাড়া ব্যবহার হচ্ছে।

ফারহান : প্রয়োজন ছাড়াই শুধুমাত্র একটা নেশার বস্তুতে যেন পরিণত হয়েছে এটি।

সাবির : অথচ শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কাজ বা কথার মধ্যেই যদি এর ব্যবহার সীমাবদ্ধ থাকত তাহলে এটিই হতে পারত খুব উপকারী বন্ধু।

ফারহান : ঠিকই। কিন্তু মানুষের বিশ্রাম, একাগ্রতা, নিষ্ঠা সবই কমছে। উল্টে বাড়ছে অস্থিরতা।

সাবির : অনেক শিক্ষামূলক, গঠনমূলক ও প্রয়োজনীয় কাজে এর ব্যবহার হলেও অনেকক্ষেত্রেই এর কুপ্রভাব সমাজের অল্পবয়সিদের ক্ষতি করছে।

ফারহান : ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনারও যথেষ্ট ক্ষতি করছে।

সাবির : অপ্রয়োজনে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, গেম ইত্যাদিতে সময় নষ্ট করে কাজের সময় কমে যাচ্ছে।

ফারহান : সত্যি, এখন মনে হচ্ছে এই আসক্তি থেকে বেরিয়ে না আসলে ভবিষ্যতে আমাদের যুবসমাজের মধ্যে খুব খারাপ প্রভাব পড়তে চলেছে।

সাবির : এ ব্যাপারে নিজেদের সতর্ক থাকতে হবে এবং বন্ধুদেরও সতর্ক করতে হবে।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
×