আধুনিক ইতিহাস লিখন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করো। দু'টি শিল্প জাদুঘরের নাম লেখো।
আধুনিক ইতিহাস লিখন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করো। দু'টি শিল্প জাদুঘরের নাম লেখো। দু'টি মৌখিক ইতিহাসচর্চার সংস্থার নাম লেখো। অথবা, ইতিহাসচর্চার ধারণার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। অথবা, আধুনিক ইতিহাস লিখন পদ্ধতি বলতে কী বোঝায়? আধুনিক ইতিহাস রচনার উপাদানগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
সূচনা: ইতিহাস লেখা ও লিখন পদ্ধতি কোনো নতুন বিষয় নয়। বহু প্রাচীন কাল থেকেই ইতিহাস লেখার প্রচলন রয়েছে। তবে ইতিহাস লিখন পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন সময়ের সাথে সাথে হয়েছে একথা বলা যায়। সর্বপ্রথম যথার্থ ইতিহাস লেখার সূত্রপাত করেন হেরোডটাস। এ কারণে তাঁকে ইতিহাসের জনক বলা হয়। ঊনবিংশ শতকে বিশ্বজুড়ে আধুনিক ইতিহাসচর্চার চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে।
ইতিহাস লিখন পদ্ধতি:
আধুনিক কালে যথার্থ ইতিহাস লিখনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলি হলো- ঐতিহাসিক উৎস ও তথ্য, ইতিহাস রচনার সুসংবদ্ধ পদ্ধতি এবং ও বিভিন্ন ঐতিহাসিক?
উৎস অনুসন্ধান:
ইতিহাস হলো উৎসভিত্তিক বিষয়। উৎস ছাড়া ইতিহাস রচনা সম্ভব নয়। ইতিহাসের উৎসগুলি হলো-
মৌখিক, প্রত্নতাত্ত্বিক, ছবিভিত্তিক এবং লিখিত বিবরণ। এছাড়া নকশা, মানচিত্র, ছবি ইত্যাদির পাশাপাশি পুরনো দলিল, পান্ডুলিপি, চিঠি, সন্ধিপত্র, সংবাদপত্র প্রভৃতি লিখিত উপাদান হিসেবে নির্ভরযোগ্য উপাদান।
তথ্য সংগ্রহ:
উৎস থেকে ঐতিহাসিক তথ্য বেছে নেওয়া হয়। গুরুত্ব অনুসারে শ্রেণিবিভাগের পর তা থেকে স্বচ্ছ ধারণা লাভের চেষ্টা চলে। ইতিহাসের তথ্য ও ঐতিহাসিক একে অপরের পরিপূরক। কারণ ইতিহাস বর্তমান ও অতীতের মধ্যে চলা অন্তহীন আলোচনা।
তথ্য যাচাই:
সংগৃহীত তথ্যাদি সমালোচনামূলক পদ্ধতিতে যাচাই করা হয়। তথ্য যাচাইয়ের ক্ষেত্রে বাহ্যিক সমালোচনার দ্বারা তথ্যের জালিয়াতি ও মৌলিকত্ব যাচাই করা হয় এবং অভ্যন্তরীণ সমালোচনার দ্বারা তথ্যের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ভাবাদর্শ ও প্রেরণা সম্বন্ধে নিশ্চিত হন ঐতিহাসিকরা।
তথ্য বিশ্লেষণ:
তথ্য যাচাইয়ের পর বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সেগুলির বিশ্লেষণ করা হয়। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে তথ্য বিশ্লেষণের পর তা প্রামাণ্য তথ্যের স্বীকৃতি পায় এবং সত্য বলে প্রমাণিত হয়।
ঘটনা ও বক্তব্যের মধ্যে সম্পর্ক:
পৃথক ঘটনা ও বক্তব্যের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে ইতিহাস রচনা এগিয়ে চলে। সম্পর্ক স্থাপনের প্রয়াস আসলে ঐতিহাসিকের সত্যরক্ষার নীতি। এটা আসলে চারটি উপাদানের মিলিত রূপ।
কার্যকারণ সম্পর্ক:
আধুনিক ইতিহাস রচনায় ঘটনার কার্যকারণ অনুসন্ধান আবশ্যিক। ঘটনার অন্তর্নিহিত কারণ অনুসন্ধান ও সঠিক উপস্থাপনা ছাড়া সম্পূর্ণ ইতিহাস রচিত হয় না। তাই প্রতিটি ঘটনার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক বিশ্লেষণের জন্য এদের পৃথকভাবে জানতে, বুঝতে হয়।
তথ্য সংরক্ষণ:
ইতিহাস লিপিবদ্ধ করার আগে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংরক্ষণ করতে হয়। সংগৃহীত ও যাচাই করা তথ্য ঐতিহাসিকরা ব্যক্তিগতভাবে লিপিবদ্ধ করে রাখেন।প্রয়োজনে ইতিহাস রচনার সময়ে তা ব্যবহার করেন।
শিল্প জাদুঘর:
এই জাদুঘরে মানুষের সৃষ্টিকর্ম, নান্দনিক বিষয়াদি প্রদর্শিত হয়। দু'টি শিল্প জাদুঘর-
• অকল্যান্ড শিল্প প্রদর্শনশালা (নিউজিল্যান্ড)।
• জাতীয় প্রতিকৃতি প্রদর্শনশালা (লন্ডন)।