ভারতে উচ্চশিক্ষা বিকাশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা আলোচনা করো।

 ভূমিকা:

 ভারতে পাশ্চাত্য ধাঁচে আধুনিক উচ্চতর শিক্ষার প্রসার ঘটানোর উদ্দেশ্যে লর্ড ক্যানিঃ-এর শাসনকালে ১৮৫৭ খ্রি. (২৪ জানুয়ারী) কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এদেশে উচ্চ শিক্ষার বিকাশে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

পাশ্চাত্য শিক্ষাব্যবস্থা:

 কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হল ভারতের প্রাচীনতম আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়। এটি ছিল দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পাশ্চাত্য ধাঁচের বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার প্রথম পর্বে লাহোর থেকে রেঙ্গুন এবং শ্রীলঙ্কা পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের পরিধি বিস্তৃত ছিল। এই বিস্তীর্ণ অঞ্চলের উচ্চ শিক্ষা তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হত।

 চরম উৎকর্ষতাঃ 

স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় (১৯০৬-১৪ খ্রি. এবং ১৯২১-২৩ খ্রি.) উপাচার্য থাকার সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার উৎকর্ষতা চরম শিখরে পৌঁছায়। তাঁর আমলে কলা ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে উন্নত গবেষণার কাজ সারা বিশ্বের প্রশংসা অর্জন করে। তাঁর অনুরোধে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ এখানে পড়াতে আসেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক অধ্যাপক ছিলেন।

প্রথম স্নাতক:

 কলিকাতা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে ১৮৫৮ খ্রি. যদুনাথ বোস ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রথম স্নাতক হন। এশিয়ার প্রথম ডি. লিট বেনীমাধব বড়ুয়া এখানকার ছাত্র ছিলেন।

কৃতী ছাত্র: 

কলিকাতা বিশ্ব বিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ করে বিভিন্ন ছাত্র পরবর্তী জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে। এখানকার কয়েকজন উল্লেখযোগ্য কৃতী ছাত্র ছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু, প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, মেঘনাদ সাহা, চন্দ্রশেখর, ভেঙ্কট রমন, সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন, রমেশচন্দ্র মজুমদার, সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়, নীহার রঞ্জন রায়, স্বামী বিবেকানন্দ, সুভাষ চন্দ্র বসু প্রমুখ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
×