উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা নাটক-বিভাব সমস্ত প্রশ্ন ও উত্তর। উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা।
১. ‘এমনি সময় হঠাৎই এক সাহেবের লেখা পড়লাম।” - “ এমনি সময় বলতে কোন পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে? সাহেবের নাম কী? তিনি কী লিখেছিলেন? ২+১+২
উত্তরঃ শম্ভু মিত্রের 'বিভাব' নাটকে দেখা যায় নাটক শুরু হতেই নাট্যকার সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। এই প্রসঙ্গেই উঠে আসে গ্রুপ থিয়েটারের আর্থিক অনটনের দিকটি। নাট্যকার দর্শকদের জানিয়েছেন যে, নাট্য-সরঞ্জাম বাদ দিয়ে যদি অঙ্গভঙ্গির সাহায্যে কাজ চালানো যেত তাহলে ব্যয়ভার অনেকটা কমে যেত।একটি পুরোনো বাংলা নাটকে এবং ভারতের অন্যান্য প্রদেশের যাত্রা-তামাশায় তিনি অঙ্গভঙ্গিনার ব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছিলেন। কিন্তু নাট্যকারের মতে, যদি কোনো সাহেব এবিষয়ে শংসাপত্র দিতেন তাহলে বাঙালি বুদ্ধিজীবীরা মেনে নিতেন। এই সময়ই তিনি এক সাহেবের লেখা পড়েছিলেন।
আলোচ্য অংশে যে সাহেবের উল্লেখ রয়েছে তিনি হলেন রুশদেশীয় বিখ্যাত চিত্রপরিচালক আইজেনস্টাইন।একবার কাবুকি থিয়েটার নামক একটি জাপানি থিয়েটার মস্কোতে গিয়েছিল। সেই থিয়েটার দেখার অভিজ্ঞতার কথাই আইজেনস্টাইন সাহেব লিখেছিলেন। সেই নাটকেও নাকি অঙ্গভঙ্গির বহুল ব্যবহার ছিল। উরু সাহেবের লেখা পড়ে নাট্যকার আরো জানতে পারেন যে, কাবুকি থিয়েটার চলাকালীন মঞ্চে যদি অতিরিক্ত লোক থাকে সেটাও কেউ খারাপ চোখে দেখে। না। আবার, যুদ্ধের দৃশ্যে অভিনেতারা কাল্পনিক খাপ থেকে কাল্পনিক তলোয়ার বার করে যুদ্ধ করে।
নাট্যকার বলেছেন যে, আইজেনস্টাইন তাঁর লেখায় কাবুকি থিয়েটারের অনেক প্রশংসা করেছিলেন।
২. 'বিভাব' কথাটির সাধারণ অর্থ কী? 'বিভাব' নাটকটির নামকরণ কতখানি তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা করো। ১+৪
অথবা, “আমাদের মনে হয় এর নাম হওয়া উচিত 'অভাব নাটক'। অভাবের চিত্র -বিভাব' নাটকে কীভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
উত্তরঃ শম্ভু মিত্রের একটি অসাধারণ একান্ত নাটক হল "বিভাব"। অলংকারশাস্ত্র অনুযায়ী চিত্তে শোকাদি নয় প্রকার স্থায়ীভাব সৃষ্টির কারণকেই বিভাব বলা হয়। বিভাব হল করুণা, শৃঙ্গার ইত্যাদি রসের উৎপত্তির হেতু।
নাটকের শুরুতেই নাট্যকার জানিয়েছেন যে, জনৈক ভদ্রলোক পুরনো নাট্যশাস্ত্র ঘেঁটে এই নাটকের নামকরণ করেছেন "বিভাব"। একইসঙ্গে, অলংকারশাস্ত্র অনুযায়ী এই নাম যথার্থ কিনা তা বিচার করার ভার তিনি সংস্কৃত পণ্ডিতদের উপর ছেড়ে দিয়েছেন। এখন দেখা যাক, অলংকারশাস্ত্রের বিচারে এই নাটকের নামকরণ সার্থক হয়েছে কি না।
শম্ভু মিত্র জানিয়েছেন যে তিনি হাসির নাটক মঞ্চস্থ করতে চান কারণ তার বক্স-অফিস ভালো। দর্শকের যাতে হাসি পায় সেইজন্য পাত্রপাত্রীগণ ভগ্নি-বহুল অভিনয় করেন। কাল্পনিক চেয়ারে বসে কাল্পনিক চায়ের কাপে চুমুক দেওয়া- এসব করে দর্শকদের হাসানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এতে তাঁরা সফল হননি। এরপর তারা যথাক্রমে একটি গডসিনা এবং একটি প্রোগ্রেসিভ লভসিন' মঞ্চস্থ করেন। এর থেকে বোঝা যায় যে নাট্যকারের আসল উদ্দেশ্য হাস্যরস পরিবেশন করা। সেদিক থেকে বিচার করলে এই নামকরণ সার্থক বলে মনে হয়।
নাটকের শেষ অংশ দেখা যায় শম্ভু মিত্র এবং অমর গাঙ্গুলী জীবনকে উপলব্ধি করার জন্য রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। সেখানে 'চাল চাই, কাপড় চাই'- এই স্লোগান দিয়ে একটি মিছিল এগিয়ে আসতে থাকে। আসলে, অন্নবস্ত্রের দাবী একটা রুঢ় বাস্তববাস্তব । মানুষ বাস্তবতা থেকে মুখ ফিরিয়ে হাসির নাটক দেখে কৃত্রিম আনন্দ উপভোগ করতে চায়। পুলিশের গুলিতে মিছিলের অগ্রভাগে থাকা একটি ছেলে ও মেয়ে চিৎকার করে পড়ে যায়। শোভাযাত্রীদের আর্ত হাহাকারে ভরে ওঠে আকাশ বাতাস। এইভাবে, হাস্যরস পরিবেশনের উদ্দেশ্য নিয়ে যে নাটকের শুরু, তা শেষাবধি জীবনরসে শুরু হয়ে ওঠে এবং নাটকটিকে সার্থকনামা করে তোলে।
৩. “তাদের অভিনয় দেখে আইজেনস্টাইন সাহের অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত হয়ে অনেক কথা লিখেছেনা।” -আইজেনস্টাইন সাহেব ঝে? তিনি কাদের অভিনয় দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন। সেই অভিনয় দেখে তিনি কী লিখেছিলেন: ১+১+৩
উত্তরঃ শম্ভু মিত্রের 'বিভাব' নাটকে উল্লেখিত আইজেনস্টাইন সাহেব হলেন রুশদেশীয় বিখ্যাত চিত্র-পরিচালক।
একবারে কাবুকি থিয়েটার নামক একটি জাপানি থিয়েটার মস্কোতে গিয়েছিল। তাদের অভিনয় দেখে আইজেনস্টাইন সাহেব উচ্ছ্বসিত হয়ে ছিলেন।
জাপানের কাবুকি থিয়েটার দেখে আইজেনস্টাইন সাহেব লিখেছিলেন যে কাবুকি থিয়েটারের অভিনয়েও ভঙ্গির বহুল ব্যবহার আছে"। উদাহরণ হিসেবে তিনি কিছু দৃশ্যের কথা তুলে ধরেছিলেন। যেমন-
একজন নাইট ক্ষুব্ধ হয়ে দূর্গ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ধীরপায়ে গম্ভীর ভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন এবং তার পিছনে দুজন শিফটার একটি প্রকান্ড দুর্গদ্বার তুলে দাঁড়িয়ে রইল। একটু পরেই দুর্গদ্বারের আকার ক্রমশ কমতে থাকে। এভাবেই বোঝানো হয় যে নাইট দুর্গদ্বার থেকে বহুদূরে চলে গেছেন। আবার, মঞ্চে দুজন শিফটারর উপস্থিতিটাও যেন স্বাভাবিক ব্যাপার।
অপর একটি দৃশ্যে যুদ্ধের বর্ণনা আছে। কাল্পনিক থাপ থেকে কাল্পনিক তলোয়ার বের করে দুজন লোকের বীভৎস যুদ্ধ হয় এবং সেই যুদ্ধে একজন মারা যায়। মরে যাওয়ার দৃশ্যটি অত্যন্ত শৈল্পিক। এরপর মৃত সৈনিকের স্ত্রী যখন কাঁদতে থাকে তখন যদি সেই সৈনিক আস্তে আস্তে উঠে মঞ্চ ছেড়ে চলেও যায়, তাতে কোনো দর্শক আশ্চর্য হয় না।
৪. “আর একবার এক মারাঠি তামাশায় দেখেছিলাম”- বক্তা মারাঠি তামাশায় কী দেখেছিলেন? বক্তা কোন প্রসঙ্গে মারাঠি তামাশার কথা বলেছিলেন? (৩+2)
উত্তরঃ 'বিভাব' নাটকে নাট্যকার শম্ভু মিত্র একটি মারাঠি তামাশা দেখার অভিজ্ঞতার কথা দর্শকদের সামনে তুলে ধরেছেন। সেই তামাশায় নাট্যকার দেখেছিলেন যে মঞ্চের একপাশে একজন চাষি জমিদারের কাছে কাকুতি-মিনতি করল এবং ব্যর্থ মনোরথ হয়ে মন্দিরে গেল। মন্দিরে যাওয়ার জন্য সে মঞ্চ থেকে প্রস্থান করল না। মঞ্চের মাঝখানে কয়েকবার ঘুরপাক খেয়ো মঞ্চের অপর পাশে এসে হাজির হল। মঞ্চের এই পাশে কাল্পনিক মন্দিরের সামনে সেই চাষি তার দুঃখের কথা ঈশ্বরের কাছে নিবেদন করতে থাকল।
নাট্যকার দর্শকদের সামনে তুলে ধরেছেন। "বিভাব" হল নাট্যকারের নাট্য-উপকরণ বিহীন নাটক উপস্থাপনের প্রয়াস। নাটকের শুরুতেই নাট্যকার অকপটে জিনিস ছাড়াও যে নাটক করা যায় এবং সেই বৃদ্ধি তিনি কোথা থেকে গেলেন- দর্শকদের এইসব কথা বলার সময়ই তিনি মারাঠি তামাশার কথা উল্লেখ করেছেন।
৫. “বুদ্ধিটা কী করে এল তা বলি। বুদ্ধি বলতে কি বোঝানো হয়েছে? বুদ্ধি কেমন করে এসেছিল ? (১+*=৫)
অথবা, “তাই অনেক ভেবেচিন্তে আমরা একটা প্যাঁচ বের করেছি।” – কে কোন প্রসঙ্গে মন্তব্য টি করেছেন তা আলোচনা করা (১+৪-৫)
উত্তর:- শম্ভু মিত্রের লেখা 'বিভাব' নাটকের আলোচ্য অংশে 'বুদ্ধিটা বলতে নাট্য-সরঞ্জাম ছাড়াই নাটক উপস্থাপন করার কথা বলা হয়েছে।
আর যে অভিনেতা এতক্ষণ জমিদার সেজেছিল, সে দর্শকদের সামনেই মুখে দাড়ি গোঁফ এঁটে পুরোহিত সেজে চাষির সামনে গিয়ে উপস্থিত হল। সে এবার চাষির সামনে ধর্মীয় তর্জন-গর্জন শুরু করে দিল। মারাঠি তামাশা দেখার এই অভিজ্ঞতা দর্শকদের জানিয়েছেন “দুরন্ত অভাব থেকেই এর জন্ম"। সিনসিনারি, আলো, ঝালর ইত্যাদি সরঞ্জাম তাদের ছিল না। এসব নাটকের শুরুতেই নাট্যকার বলেছেন যে, তাদের নাটক করার মতো প্রয়োজনীয় স্টেজ, আলো, সিনসিনারি, ঝালর ইত্যাদি কিছুই নেই- আছে শুধু নাটক করার বোকামিটা। এই দূরত্ব অভাবের মধ্যে যদিও একটা নাটক মঞ্চস্থ করা হয় তো সরকারের পেয়াদা খাজনা নিতে হাজির হয়ে যায়। এই লেখাটিই নাট্যকারের মনে রেখাপাত করে। মঞ্চে রথও নেই, ঘোড়াও নেই অথচ রাজা এমন ভঙ্গি করতেন যে সকলের মনে হত রাজা রথে চড়লেন। পুরোনো দিনের নাটকে যদি অঙ্গভঙ্গিমার সাহায্য নেওয়া হত, তাহলে এখনকার নাটকেও তার প্রয়োগ চলতে পারে। এড়িয়া যাত্রায় এবং মারাঠি তামাশায় একই রকমের অঙ্গভঙ্গিমার ব্যবহার লেখক দেখেছিলেন। সবশেষে রুশ চলচ্চিত্রকার আইজেনস্টাইনের একটি লেখাতে জাপানের কাবুকি থিয়েটার সম্পর্কে অনেক প্রশংসা পড়ে । নাট্যকার 'বিভাব' নাটক মঞ্চস্থ করার পরিকল্পনা করেন।
৬. “আমরা বাঙালিরা শুনি কাঁদুনে জাত..."- উক্তিটি কার ? মন্তব্যটি নাটকের ক্ষেত্রে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ তা আলোচনা কর।
উত্তর:- আলোচ্য উক্তিটি শম্ভু মিত্র রচিত বিভাব নাটকের অভিনেতা অমর গাঙ্গুলীর।
জীবনের অন্যতম হাসির খোরাক খুঁজতে গিয়ে নাটকের অন্যতম চরিত্র শম্ভু মিত্র অমর গাঙ্গুলীর বাড়িতে উপস্থিত হয়। আলোচ্য প্রথমটি মধ্য দিয়ে তাদের নাটকটি শুরু হয়েছে বলে তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। নাট্যদলের সম্পাদক অনেক ভেবে চিত্তে বক্সঅফিসের চাহিদার কথা মাথায় রেখে একটি হাসির নাটক অভিনয় করবে বলে মনে করেছেন।
এরপর হাসির খোরাক এর প্রয়োজন বলে তারা একের পর এক প্রেমের দৃশ্যে অভিনয় করতে থাকেন। কিন্তু তাদের এই প্রচেষ্টা নাটকে কোনরকম হাস্যরস সৃষ্টি করতে পারেনি। আসলে নাটক স্বতঃস্ফূর্ত তাকে জোর করে অভিনয় করতে বৃথা প্রচেষ্টা। যখন নাট্য দৃষ্টি ব্যাহত হয় তখন তারা বাস্তবে রাস্তায় নেমে আসে।
বাস্তবের রাস্তায় নেমে এসে দেখতে পায় ক্ষুধার্ত মানুষের মিছিল। সেই মিছিলের ওপর পুলিশের গুলি আর মানুষের হাহাকার। এসকল বিষয়টিকে শম্ভু মিত্র অমর গাঙ্গুলী কে জিজ্ঞাসা করে, - তার এবার হাসি পাচ্ছে কিনা? আসলে এখানে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের সুর প্রকাশিত হয়েছে।
৭. "এই পড়ে বুকে ভরসা এলা"- কী পড়ে বক্তা বুকে ভরসা পেয়েছিলেন? প্রসন্ন উল্লেখ করে 'ভরসা' পাওয়ার তাৎপর্য আলোচনা করা । ২+৩
উত্তর:- শম্ভু মিত্রের "বিভাব" নাটকের আলোচ্য অংশে রাশিয়ার খ্যাতনামা চিত্রপরিচালক আইজেনস্টাইনের একটি লেখা পড়ে নাট্যকার ভরসা পেয়েছিলেন।
আলোচ্য নাটকে দেখা যায় নাটক শুরু হতেই নাট্যকার সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। এই প্রসঙ্গেই উে আসে গ্রুপ থিয়েটারের আর্থিক অনটনের দিকটি। নাট্যকার দর্শকদের জানিয়েছেন যে, নাট্য-সরঞ্জাম বাদ দিয়ে যদি এক্সভমির সাহায্যে কাজ চালানো যেত তাহলে ব্যয়ভার অনেকটা কমে যেত। তিনি নিজের ভাবনার সমর্থনে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেন।
একটি পুরোনো বাংলা নাটকে এই অঙ্গভঙ্গিমার নিদর্শন পাওয়া গেল। উড়ে দেশের এক যাত্রাপালাতে এবং একটি মারাঠি তামাশায় নাট্যকার একইরকম অঙ্গভঙ্গির ব্যবহার দেখলেন। অর্থাৎ, নাট্যকার যেরকম নাটক করার কথা ভাবছেন, তেমন নাটক আগেও হত এবং এখনো হয়। সুতরাং বাংলা নাটকেও এই রীতি ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু কলকাতার শিক্ষিত সমাজ সেই নাটক মেনে নেবে কি না এই দুশ্চিন্তায় তিনি কার্যত চুপসে গেলেন। শিক্ষিত বাঙালিরা নতুন কোনো কিছু গ্রহণ করতে পারে না, এমনকি রবি ঠাকুরকেও মেনে নেয়নি। নাট্যকারের মতে, যদি কোনো সাহেব এবিষয়ে শংসাপত্র দিতেন তাহলে বাঙালি বুদ্ধিজীবীরা মেনে নিতেন। এই সম্যাই তিনি আইজেনস্টাইনের লেখাটি পড়েছিলেন।
আইজেনস্টাইন সাহেব জাপানের কাবুকি থিয়েটারের খুব প্রশংসা করেছিলেন এবং এই নাটকেও নাকি অঙ্গভঙ্গির বহুল ব্যবহার ছিল। তাই তাঁর লেখা পড়ে নাট্যকার ভরসা পেয়েছিলেন।
৮. “সত্যি কথা বলার দোষ”- “সত্যি কথাটি কী ছিল? সত্যি কথা শুনে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কী করেছিলেন? ২+৩
উত্তর :- শম্ভু মিত্রের 'বিভাব নাটকে অমর গাঙ্গুলী বৌদি অর্থাৎ তৃপ্তি মিত্রকে একটি সত্যি কথা বলেছিলেন। নাটকের শুরুতেই দেখতে পাই শম্ভু মিত্র দর্শকদের সঙ্গে আলাপচারিতা প্রসঙ্গে বলছেন নাট্য উপকরণ না নিয়ে নাটক মঞ্চস্থ করার কথা। এরপর নিজেই শুরু করে দেন সেইরূপ অভিনয়। বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে সিগারেট খাওয়া বসা প্রভৃতির অভিনয় করতে থাকেন। উদ্দেশ্যটা ছিল মানুষকে হাসানোর।
কিন্তু শম্ভু মিত্রের অভিনয় দেখে বৌদি অথবা অমর গাঙ্গুলীর হাসি পায় না। কারণ এতে কোন গল্প ছিল না। এরপর বৌদির কথা অনুযায়ী একটি 'লভ সিন' মঞ্চস্থ করা হয়। কিন্তু সেবারেও কারো হাসি পেল না। বৌদি এবার একটি প্রগ্রেসিভ লড সিন' করার প্রস্তাব দেন। এই দৃশ্যে শম্ভু মিত্র একজন আন্ডারগ্রাউন্ড পলিটিক্যাল লিডার, তৃপ্তি মিত্র তার স্ত্রী এবং অমর গাঙ্গুলী একজন পুলিশ। অনেক পরিশ্রম করে বৌদির প্রস্তাবিত লভ সিন মঞ্চস্থ করা হলে বৌদি অমর গাঙ্গুলীর কাছে জানতে চান তার হাসি পেয়েছে কিনা। অমর গাঙ্গুলী অকপটে জানিয়ে দেন যে তার হাসি পায়নি। বৌদি পুনরায় জানতে চান এবং গাঙ্গুলী পুনরায় বলেন যে তার এতে হাসি পায়নি। এটাই হল উল্লেখিত সত্যি কথা।
এই সত্যি কথাটি শোনার পর উদ্দিষ্ট ব্যক্তি অর্থাৎ বৌদি তৃপ্তি মিত্র রেগে স্টেজ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।