জোয়ার ভাটার প্রভাব ও গুরুত্ব আলোচনা করো।
জোয়ার ভাটার প্রভাব ও গুরুত্ব আলোচনা করো।অথবা,জোয়ার ভাটার ফলাফল ব্যাখ্যা করো।
উত্তর :- জোয়ার ভাটার ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব নিম্নরূপ :(ক) ইতিবাচক প্রভাব :
(I) নৌ-চলাচলের সুবিধা : জোয়ার নদনদীতে জলের পরিমাণ বাড়ায়, এতে নদীর নাব্যতা বাড়ে ও নৌ-চলাচলের সুবিধা হয়।
(2) আবর্জনামুক্ত নদীপথ : ভাটার সময় সব আবর্জনা পলি ইত্যাদি জলবাহিত হয় মোহনায় গিয়ে মিশে। এতে নদীখাতের গভীরতা বাড়ে, জল পরিষ্কার থাকে।
(3) নদী বন্দরের সুবিধা : জোয়ারের ফলে নদীখাতের বিস্তার ও গভীরতা বাড়ে। এতে দেশের অভ্যন্তরে বড়ো বড়ো জাহাজ ঢুকতে পারে।
(4) বরফমুক্ত নদী বন্দর : জোয়ারের লবণাক্ত জল শীতের দেশের নদী বন্দরে ও বরফ জমতে দেয় না। নদী বন্দরকে উয় ও বরফমুক্ত রাখে। ` (5) জলবিদ্যুৎ উৎপাদন : এই শক্তি থেকে উপকূলে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। সুন্দরবন,করমন্ডল ও গুজরাট উপকূলে জোয়ার ভাটার শক্তিকাজে লাগিয়ে ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে।
(6) মাছের সমাগম : ভরা বর্ষায় ডিম পাড়ার জন্য অনেক সামুদ্রিক মাছ নদীমুখ দিয়ে নদী অববাহিকায় চলে আসে। তখন জেলেরা প্রচুর পরিমাণে মাছ ধরতে পারে এতে জীবিকার সংস্থান হয়। যেমন ইলিশ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ।
(খ) নেতিবাচক প্রভাব :
(1) লবণতা বাড়ায় : জোয়ারের ফলে নদীর জল ও চাষের জমি লবণাক্ত হয়ে পড়ে। ফলে তা পানের ও চাষের অনুপযুক্ত হয়ে যায়।
(2) অগভীর নদীখাত :- কম খরস্রোতা নদীখাতে জোয়ার ভাটার ফলে পলি, কাদা ও আবর্জনার সঞ্জয় বাড়ে। ফলে নদীখাত অগভীর হয়।
(3) বানডাকা :- শক্তিশালী জোয়ারে উপকূল প্লাবিত হয়। একে বানডাকা বলে।
(4) ক্ষয়ক্ষতি :- জলস্ফীতি বেশি হলে কৃষিজমি প্লাবিত হয়ে চাষের ক্ষতি করে। এছাড়া সম্পত্তি জনজীবনের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে থাকে জোয়ার ভাটা ।
(5) ব-দ্বীপে সৃষ্টিতে ব্যাখাত : জোয়ার ভাটার বালি, পলি, কাদা, জন্মালের স্তূপসরে যাওয়ায় নদী মোহনায় ব-দ্বীপ গঠনের কাজ বিলম্বিত হয়।