বিজ্ঞান আশির্বাদ না অভিশাপ অথবা বিজ্ঞানের সুফল ও কুফল
বিজ্ঞান আশির্বাদ না অভিশাপ অথবা বিজ্ঞানের সুফল ও কুফল
আধুনিক কালে বিজ্ঞানের ভূমিকা:- বিজ্ঞানের দ্বারা এ জগৎ উচ্ছিষ্ট । সত্যতা যদি হয় বিজ্ঞানের দ্রুত উন্নতি সত্ত্বেও সভ্যতার কপালে দুশ্চিন্তার কলরেখা । বিজ্ঞানের মতো মাঝে একদিকে সুজন অন্যদিকে ধ্বংস । বিজ্ঞানের মারণযজ্ঞে ত্রস্ত মানুষ তাই প্রশ্ন তুলেছে বিজ্ঞান আশির্বাদ না অভিশাপ ।
বিজ্ঞান: কাল থেকে কালান্তরে :- সভ্যতার ক্রমবিকাশে দেখা দিল নব নব বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার । মানুষ নিজের প্রয়োজনে সৃষ্টি করে । বিজ্ঞানকে নিজের কাজে লাগিয়ে নিজ উদ্দেশ্যসাধন করছে মানুষ । বিজ্ঞান এই অর্থে মূলত মানবকল্যাণমুখী । বিজ্ঞানের বলে বলীয়ান পৃথিবীর সমস্ত অজ্ঞাত কুসংস্কার ও জড়তা কাটিয়ে উঠেছে । জীবনে এসেছে তাদের অফুরন্ত কর্মশক্তি , অপর্যাপ্ত গতি আজ ঊষর মরুকে করেছে জলসিক্ত উর্বর , উষর পৃথিবীকে করেছে শস্যশালিনী । নবীন জগৎ সন্ধানে আজ মানুষ ছুটে চলছে মেরু অভিযানে।
বিজ্ঞান বনাম মানুষ:- জীবনের নানা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে চলেছে । রবীন্দ্রনাথ ও মহাত্মা গান্ধী অতিযান্ত্রিকতার অশুভ পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করেছেন । বিজ্ঞান মানুষকে নিয়েছে বেগ , কেড়ে নিয়েছে আবেগ । অতিরিক্ত বিজ্ঞান - নির্ভরতা মানুষকে পঙ্গু করেছে । যন্ত্র সভ্যতায় মানুষ আজ যথুতুল্য । মানুষ তার মনুষ্যত্ব হারাতে বসেছে ।
বিজ্ঞান অশুভ দিক :-'বাঘ বাঘকে খায় না , কিন্তু বর্তমান যান্ত্রিক সভ্যতায় পাশবিকতা রয়েছে , যে বিজ্ঞান নিয়ত কল্যান কর্মেরত,সেই বিজ্ঞানকেই মানুষ কাজে লাগিয়েছে এই সুন্দর সৃষ্টিকে ধ্বংসের কাজে । খাদ্যে ও ওষুধে ভেজাল , মারণাত্বের উদ্ভাবনে মানুষ এখন এত পরিপক্ক যে , একটি ছোট্ট বোতাম টিপলেই মুহূর্তে পৃথিবীর একটি বৃহত্তর অংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে । হিরোসিমা ও নাগাসাকিতে পরমাণু বোমার যে বিষময় পরিণত , তা আজও বিশ্ববাসী ভুলতে পারেনি । আজকের সন্ত্রাসবাদও বিজ্ঞানকে হাতিয়ার করেছে ।
বিজ্ঞান ও ধ্বংস:- যে বিজ্ঞান জীবনদায়ী ওষুধ যন্ত্রপাতি আবিষ্কার করে মানুষকে নবজীবন দান করেছে , সেই বিজ্ঞানই আবার মারণাস্ত্র আবিষ্কার করে জীবনকে ধ্বংসের কাজে ব্যাপৃত থাকছে । এর প্রভাবে পৃথিবীর বায়ু , জল , মৃত্তিকা আজ দূষিত ।
মঙ্গল ও শুভবুদ্ধি:- বিজ্ঞান ধ্বংস লীলায় জন্য দায়ী নয় , দায়ী মানুষ । বিজ্ঞান যদি মানুষের শুভবুদ্ধির দ্বারা পরিচালিত হয় , তাহলে বিজ্ঞান কেবলমাত্র মানবকল্যাণী রূপে মানুষের ভৃত্য হয়েই থাকবে ।
উপসংহার :- মানুষ যদি মানুষ হয় , বিজ্ঞানকে যদি মানবকল্যাণে প্রয়োগ করতে পারে , তাহলে বিজ্ঞান হবে আশীর্বাদ । আর হয়ে দুঃখ করে বলেছেন যদি অমানুষ হয়ে বিজ্ঞানকে ধ্বংসের কাজে প্রয়োগ করে , তাহলে বিজ্ঞান হয়ে উঠবে অভিশাপ ।