প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞান অথবা আধুনিক কালের বিজ্ঞান অথবা দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান

 

 প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞান  অথবা আধুনিক কালের বিজ্ঞান অথবা দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান

প্রাত্যহিক জীবন ও বিজ্ঞান:-  বিজ্ঞান ও আধুনিক জীবন সমার্থক । আধুনিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অনিবার্য থেকে বিজ্ঞান মানুষের প্রতিদিনের সঙ্গী ও বন্ধু । আধুনিক সভ্যতায় বিজ্ঞান এক অপরিহার্য বিষয় । ব্যবহারিক ছাড়া আমরা এক পা - ও চলতে পারি না । সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিজ্ঞান আমাদের জীবন অচল অনড় জড় । 

বিজ্ঞানের দান :- বিজ্ঞানীদের অতন্দ্র তপস্যার ফলে আজ বিজ্ঞানের বিজয় বৈজ্যান্তী জলে - স্থলে - অন্তরীক্ষে উড্ডীন । বিজ্ঞান থেকে শুরু করে রাতে শুতে যাওয়ার প্রাক মুহূর্ত পর্যন্ত বিজ্ঞান তার জাদুতে মরুকে রূপান্তরিত করেছে সবুজ প্রান্তরে । দুরন্ত নদীর জলধারাকে বন্দি করে ঊষর প্রাস্তরে সেই জলধারা দিয়ে জলসেচন করে তাতে সবুজ বিপ্লব ঘটাচ্ছে । বিজ্ঞানের কৃপায় দুর আর দুর নেই , দূর হয়েছে নিকট । সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা আজ বিজ্ঞানের কৃপায় সহজ হয়ে গেছে । বিজ্ঞানের আবিষ্কার মানুষের জীবনকে অনেক সহজ করে তুলেছে ।

Bangla rochona


 বিজ্ঞানের দান আমাদের ঘরে ঘরে এবং সর্বত্র:-  দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের অবদান একান্ত অপরিহার্য । সকালে শয্যাত্যাগ আমাদের সেবায় নিযুক্ত থাকে । দিনের প্রথম পর্বে ঘড়ি আমাদের জানিয়ে দেয় সময়ের সংকেত , রান্নার জন্য ব্যবহৃত হয় গ্যাস বা ইলেকট্রিক ওভেন , কুকিং রেঞ্জ । শীতকালে স্নানের সময় পেয়ে হাই ওয়াটার হিটার । দিনের দ্বিতীয় পর্বে ছাত্রছাত্রী , অফিসযাত্রী সকলেরই নিজ নিজ কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো পড়ে যায় । সেজন্য ট্রাম , বাস , ট্যাক্সি , রেল , চক্ররেল , পাতালরেল , রিকশা , অটোরিকশা , টেম্পো অপেক্ষা করে থাকে । যোগাযোগকে সহজ করেছে টেলিফোন বা দুরভাষ । জরুরি প্রয়োজনে থানা , হাসপাতাল , দমকল প্রভৃতির সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা যায় । দূরকে নিকট করেছে টেলিফোন ও টেলিগ্রাম । আজকাল বহুতল অফিস কাছারিতে সিঁড়ি ভেঙে উঠতে হয় না , তার জন্য রয়েছে লিফট বা স্বস্তি দিতে এগিয়ে এসেছে কুলার বা এয়ারকন্ডিশনার । টিভি আর রেডিয়ো ঘরের মধ্যে বিশ্বকে এনে দিয়েছে । অবসর সময় কাটানো ও বিনোদনের প্রধান বাহন আজ এগুলি । তা ছাড়া এই ইলেকট্রনিক প্রচারমাধ্যম দুটি প্রতি মুহূর্তে সংঘটিত বিশ্ব - ব্যাপারের সঙ্গে আমাদের যুক্ত করে চলেছে । সারাদিনের কর্মক্লান্তির পর মানুষ ঘরে ফিরে টিভির পর্দায় চোখ রেখে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দেখে ক্লান্তি অপনোদন করে । এভাবেই দিনের শুরু থেকে দিনের শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞান বিশ্বস্তভাবে মানুষের সেবা করে চলেছে ।

 বিনোদনের বিজ্ঞান:- বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত উপাদানে গৃহিণী তাঁর রান্নাঘরকে নবসাজে সজ্জিত করার সুযোগ পেয়েছেন । ভি.সি আর , ভি . সি . ডি - র দৌলতে ঘরে বসে আমরা ভালোলাগা ছবি দেখার সুযোগ পাচ্ছি , টেপরেকর্ডারে গান শুনে মনকে বিষণ্ণতা থেকে মুক্ত করতে পারছি । এককথায় বিজ্ঞান মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে একাধারে মসৃণ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলেছে ।

 উপসংহার:-  বর্তমান যুগে মানুষ বিজ্ঞানের আশীর্বাদে শতদল মাথায় করে জীবনকে করেছে সুন্দর । দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনের প্রতিক্ষেত্রে বিজ্ঞানের নব নব সৃষ্টিকে কাজে লাগিয়েছে মানুষ । বিজ্ঞান দৈনন্দিন জীবনে আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে । বিজ্ঞান আজ মানুষের বন্ধু , সহযোগী সেবক । দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান আমাদের নিত্য সেবা করে চলেছে । একথা ভাবলে শিউরে উঠতে হয় যে , বিজ্ঞান যদি এত প্রসন্ন না হত তা হলে এই গতিময় বিশ্বে আমরা বাঁচতাম কী করে ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
×