বায়ুর ক্ষয় কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপগুলি বর্ণনা করো।

 উত্তর :বায়ুর ক্ষয় কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ : বায়ুর ক্ষয় কার্যের প্রভাব সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায় শুষ্ক মরুঅঞ্চলে। এই অঞ্চলে বায়ু প্রধানত তিনটি পদ্ধতিতে ক্ষয়কার্য করে। যেমন – (১) অবঘর্ষ প্রক্রিয়া (২) ঘর্ষণ প্রক্রিয়া এবং (৩) অপসারণ প্রক্রিয়া। (১) অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট ভূমিরূপ :

(ক) গৌর ও গারা : মরু অঞ্চলে বায়ুর প্রবাহ পথে কোনো শিলাস্তুপ উলম্বভাবে অবস্থান করলে শিলাস্তূপের নিচের দিকে অবঘর্ষ প্রক্রিয়ার অধিক ক্ষয়কাজ করে। ফলে শিলাস্তুপটি নিচে সরু এবং উপরে চওড়া হয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো অবস্থান করে। একেই গৌর বলে। একাধিক গৌরকে একত্রে গারা বলে। আফ্রিকার সাহারা মরুভূমিতে ইহা অনেক দেখা যায়।

 ইয়ারদাং :-  বায়ু প্রবাহের গতিপথে কঠিন ও নরম শিলা উলম্বভাবে অবস্থান করলে অবঘর্ষের দ্বারা নরম শিলাক্ষয় পেয়ে প্রায় অবলুপ্ত কিন্তু কঠিন শিলা টিলার আকারে দাঁড়িয়ে থাকে। এই প্রকার ভূমিরূপকে ইয়ারদাং বলে। চিলির আটাকামা মরুভূমিতে ইয়ারদাং পরিলক্ষিত হয়।

 ইনসেলবার্জ :-  মরু অঞ্চলের কোনো উচ্চভূমি দীর্ঘকাল ধরে বায়ু ও জলধারার ক্ষয়ের ফলে প্রায় সমতলভূমিতে পরিণত হয়, কিন্তু কঠিন শিলা দ্বারা গঠিত অংশগুলি অনুচ্চ টিলার আকারে অবশিষ্টাংশ রূপে থাকে। একে ইনসেলবার্জ বলে।

(২) ঘর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপঃ

(ক) সিলেট সিডসস্যান্ড : বায়ুর প্রবলবেগ আকর্ষণে বড়ো বড়ো প্রস্তরময় খণ্ড পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটিয়ে সিলেট দানার মতো ছোটো ছোটো শিলাখণ্ডের সৃষ্টি করে। এগুলিকে একত্রে বলে সিলেট সিডস স্যান্ড। এর ফলে মরু অঞ্চলে বালুকণার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

(৩) অপসারণের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপঃ

(ক) ব্লো আউট/অপসারণ গর্ত :-  মরু অঞ্চলে প্রবল বায়ু প্রবাহের ফলে বালিস্তর অপসারিত হওয়ায় কোনো কোনো স্থান অবনমিত হয়। এই অবনমিত অংশকেই ব্লো আউট বা অপসারণ গর্ত বলে। মিশরের কাতারা পৃথিবীর বৃহত্তম ব্লো আউট।

(খ) মরুদ্যান : বিশাল অঞ্চল জুড়ে বহুদিন ধরে বালি অপসারিত হতে হতে যদি অবনত অংশটির গভীরতা ভূ-গর্ভের জলস্তর পর্যন্ত পৌঁছে যায়, তবে সেখানে মরুদ্যান গড়ে ওঠে। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ এরূপ একটি মরুদ্যানের ওপর অবস্থিত।

Madhymik geography suggestion



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
×